তজুমদ্দিনে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড় নৌকাডুবি নিখোঁজ জেলে একজনের লাশ উদ্ধার ॥
হেলাল উদ্দিন লিটন, তজুমদ্দিন (ভোলা): ভোলার তজুমদ্দিনে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে মেঘনা নদীতে প্রায় অর্ধশত নৌকা ডুবে দুই জেলে নিখোঁজের দুইদিন পর এক জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এসময় আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন, এখনো
নিখোঁজ রয়েছে আল আমিন নামের অপর এক জেলে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে তজুমদ্দিন উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ২০ মিনিটের আকস্মিক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারনা করছে উপজেলা প্রশাসন। ঝড়ের তান্ডবে উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মুরগির খামার, দোকান, বাড়িঘরের টিনের চালা উড়ে যায়। ঘূর্ণিঝড়ে গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় ২দিনেও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নসহ স্লইজঘাট এলাকার দোকানপাট ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এসময় ঝড়ে গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে এবং ঘরবাড়ির টিন উড়ে যায়। ইতোমধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে প্রশাসন কাজ শুরু করেছে। স্থানীয়রা জানান, আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে চৌমুহনী মাছ ঘাটের জেলে বেল্লাল মাঝি ৫ জেলে নিয়ে নদীতে ট্রলার ডুবে যায়। ৪জন সাঁতরিয়ে চরে আশ্রয় নিলেও পানির স্রোতে বেলালকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের দুই দিন পর রবিবার ভোরে মনপুরা উপজেলার মাষ্টার হাট সংলগ্ন মেঘনায় বেল্লালের ভাসমান লাশ দেখতে পায় স্থানীয়। পরে স্বজনরা বেলালের লাশ সনাক্ত করেন। বিকেলে দেওয়ান পুর গ্রামে তার দাফন সম্পন্ন হওয়ার কথা জানান স্বজনরা। বেলাল ওই গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে। অপরদিকে আল আমিন নামে জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এদিকে ঝড়ের আঘাতে স্লইজঘাট এলাকার প্রায় ২৫টি দোকান বিধ্বস্ত হয়। পুরো উপজেলায় বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মুরগির খামার, দোকান, বাড়িঘর, ফসলী জমি ও গাছপালা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তজুমদ্দিন কোস্টগার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডার জানান, ঝড়ে নৌকা ডুবিতে অনেকে আহত হয়েছে এবং দুই জেলে নিখোঁজের সংবাদ পেয়েছি। রবিবার ভোরে মনপুরার মাষ্টার সংলগ্ন খাল থেকে বেলালের লাশ উদ্ধার করা হলেও আল আমিন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। তাকে উদ্ধারে আমাদের কোষ্টগার্ডের অভিযান চলমান রয়েছে। তজুমদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ারুল হক বলেন, নিখোঁজ জেলে লাশ উদ্ধারে সংবাদ পেয়েছি। লাশ বুঝে পাওয়ার পর সুরাহ রিপোর্ট করে পরবর্তী আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ণ কর্মকর্তা মোঃ সেলিম মিয়া বলেন, নিখোঁজ জেলেদের জন্য বরাদ্দ চেয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট চিঠি দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ আসলেই তাদের পরিবারের নিকট করাদ্দের অর্থ হস্তান্তর করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুভ দেবনাথ জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।