আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে চান? - বিস্তারিত
ঢাকা আজঃ শনিবার, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা মে, ২০২৪ ইং, ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
সর্বশেষঃ

মায়ের মমত্ববোধে ভোলায় তোফায়েল গড়ে তুলেছেন ফাতেমা খানম কমপ্লেক্স।

ভোলার খবর ডেস্ক: তোফায়েল আহমেদ জন্ম ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ অক্টোবর ভোলার কোড়ালিয়া গ্রামে। পিতা মৌলভী আজহার আলী, মা ফাতেমা বেগম। ১৯৬০ সালে ভোলা সরকারি হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে ১৯৬২ সালে আইএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে এমএসসি। ১৯৬৪ সালে দনিয়াস্থ আলহাজ মফিজুল হক তালুকদারের জ্যেষ্ঠ কন্যা আনোয়ারা বেগমের সঙ্গে তিনি পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। সংসারজীবনে এক কন্যাসন্তানের জনক। রাজনৈতিক জীবন: ১৯৬৬-৬৭ মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমানে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) নির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) ছিলেন। ১৯৬৮-৬৯-এ গণজাগরণ ও ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন তিনি ডাকসুর ভিপি হিসেবে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জতীয় পরিষদের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয় লাভ করেন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুজিব বাহিনীর অঞ্চল ভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত চার প্রধানের একজন ছিলেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় ভূমিকা: ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরবর্তীকালে ১৪ জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সচিবের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৭০ সালে ২৬ বছর বয়সে কনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে এমএলএ নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে দুটি করে আসনে নির্বাচিত হন।। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন তিনি শেখ হাসিনা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
তোফায়েল আহমেদের বাবা ১৯৭০-এর ২৫ এপ্রিল ৬২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। সেদিন জনসভা ছিল চট্টগ্রামের মিরেশ্বরাইতে। বাবার মৃত্যু সংবাদ তাঁর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু পেয়েছিলেন। তিনি চট্টগ্রামে আৗয়ামীলীগ নেতা এম এ আজিজকে জানিয়েছিলেন, ‘তোফায়েলের বাবা মৃত্যুবরণ করেছে। সভা শেষে চাঁদপুর হয়ে ২৬ এপ্রিল সকালে গ্রামের বাড়ি পৌঁছান। ততক্ষণে বাবার দাফন হয়ে গেছে। বাবার সঙ্গে তাঁর শেষ দেখা হয় ‘৭০-এর ১৭ এপ্রিল।
মায়ের কথা বলতে গিয়ে তিঁনি বলেন, মা কষ্ট হলেও আমাকে লেখাপড়ায় নিয়মিত উৎসাহ জোগাতেন। মা আমাকে আদর করে ‘মনু’ বলে ডাকতেন। সবসময় বলতেন, ‘মনু, মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করো।’ মায়ের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতাম। প্রতি সপ্তাহে ছুটির আগের দিন মায়ের কাছে চলে যেতাম। ১৯৬০-এ ম্যাট্রিক পাস করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হই। কিন্তু মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে এটা বেদনাদায়ক। তখন ছোট্ট একতলা কাঠের লঞ্চে গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকা আসতে ২৪ ঘণ্টা লাগত। সে জন্য ঢাকা কলেজ ছেড়ে বরিশাল ব্রজমোহন কলেজে ভর্তি হই। কলেজ থেকে সাপ্তাহিক ছুটিতে লঞ্চযোগে ভোলায় মায়ের কাছে একদিন থেকে ফিরে আসতাম।
মায়ের প্রতি মমত্ব ও দায়িত্ববোধ থেকে তোফায়েল আহমেদ ৬০ বিঘা জমির ওপর ভোলা জেলার উপশহর বাংলাবাজার ফাতেমা খানম শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বৃদ্ধাশ্রম, মসজিদ, এতিমখানা সেবামূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। যাহা এখন ফাতেমা খানম কমপ্লেক্স হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
কমপ্লেক্সে ১৯৯৭ সালে সরকারের অনুমোদন লাভ করে তোফায়েল আহমেদের প্রতিষ্ঠিত ফাতেমা খানম কলেজটি মানসম্পন্ন ও যুগোপযোগী উচ্চশিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে দেশ–বিদেশে সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে দেশ গড়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। অনেকেই বিদেশে উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত আছেন। উচ্চশিক্ষা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে মানসম্পন্ন শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনার দায়িত্বভার দিয়েছেন তারই উত্তরসুরি মইনুল হোসেন বিপ্লবকে, যিনি দায়িত্ব নিয়ে প্রতিষ্ঠানাটিকে গড়ে তুলেছেন আধুনিক ও প্রযুক্তি সমৃদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে। যার সুদক্ষ ও সুচতুর পরিচালনায় প্রতিষ্ঠানটি বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে শীর্ষ স্থান দখল করতে সক্ষম হয়। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে গিয়ে দূর্নীতি ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা নেয়া ছিল মুল উদ্দেশ্য। প্রতিষ্ঠানটি প্রত্যেকটি জাতীয় দিবসসহ সহপাঠ্য শিক্ষায়ও রয়েছে এগিয়ে। প্রতিষ্টানটিতে রয়েছে এইচ এস সি, এইচ এস সি (বিটি), স্নাতক (পাস) বিএ, বিএসএস ও বিএসসি, স্নাতক (সম্মান) সমাজকর্ম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, বাংলা, ইংরেজী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ইতহিাস, ব্যবস্থাপনা, হিসাব বিজ্ঞান ও ইসলাম শিক্ষা। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৪৫০০ ( চার হাজার পাঁচশত) শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে। প্রতিষ্ঠানটি সমগ্র ভোলা জেলায় একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন হারুন অর রশিদ। যিনি প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও গভর্নিং সদস্যদের সঠিক নির্দেশনায় সকলের সাথে কাঁধে কাাঁধ মিলেয়ে সুনাম অক্ষুন্ন রাখা, গুণগত ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেছেন। প্রতিষ্ঠানটি গ্রামীণ পরিবেশে অবস্থিত হলেও এ ক্যাম্পাসে সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, অত্যাধুনিক অডিটরিয়াম এবং নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। কোর্স কারিকুলামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ সুপরিসর ল্যাবরেটরি রয়েছে। তা ছাড়া দুটি খেলার মাঠ, বিশাল শহীদ মিনার ও মুক্ত মঞ্চ সারিবদ্ধ গাছ এ কলেজ ক্যাম্পাসের অন্যতম আকর্ষণ। প্রায় ১০ হাজার বই ও দেশি-বিদেশি জার্নাল সমৃদ্ধ লাইব্রেরি শিক্ষার্থীদের ও শিক্ষকমণ্ডলীর শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে।
তুলনামূলক কম বেতন পরিশোধের মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা রয়েছে এই কলেজে। এ ছাড়া এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার মেধার ফলাফল, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, বিধবার সন্তান, সহোদর, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, জাতীয়ভাবে স্বীকৃত খেলোয়াড়, শিল্পী সর্বোপরি অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ফুল-প্রি এবং হাফ ফ্রি প্রদান করা হয়। এ ছাড়া রয়েছে শিক্ষক কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধা। রয়েছে আন্ত: ফলাফলের উপর বিশেষ বৃত্তির সুযোগ। সহপাঠ্যক্রম এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশ ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম উৎসাহিত করে থাকেন। ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, জাতীয় দিবসগুলো যথাযথ মর্যদায় পালনসহ বিশাল পরিসরে বার্ষিক সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বারংবার বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে। কলেজটির অভ্যন্তরে রয়েছে চার তলা বিশিষ্ট একটি হোস্টেল যেখানে শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। কলেজে ১৫ কোটি টাকা ব্যায়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন টুলু অত্র কলেজের বিদ্যোৎসাহী সদস্য প্রশাসনিক ভবন, কলা ভবন, হোস্টেল ও আধুনিকমানের অডিটরিয়াম তৈরী করে দিয়েছেন। আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত চার তলা ভবনের রয়েছে আধুনিকমানের কম্পিউটার ল্যাব। যেখানে আধুনিক প্রযুক্তিগত সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে। কলেজ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে কথা হয় অত্র কলেজের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষকদের মধ্যে একজন শিক্ষক আবুল বাসার, সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ইসলামের ইতহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ। তিনি বলেন ১৯৯৫ সালে ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ তোফায়েল আহমেদের মায়ের নামে আমরা কয়েকজনে মিলে ফাতেমা খানম এ্যাকডেমী কলেজ প্রতিষ্ঠা করি। পরিবর্তীতে একাডেমী কলেজ বাদ দিয়ে আমাদের নেতা আমাদের অহংকার তার মায়ের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে আলাদা একটি কমপ্লেক্স তৈরী করে আমাদেরকে অত্যান্ত মনোরম পরিবেশে শিক্ষাদানের সুযোগ করে দিয়েছেন।
এই কমপ্লেক্সে রয়েছে তাঁর বাবা-মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত আজহার ফাতেমা মেডিকেল কলেজ যেটি এখন শুধু আনুষ্ঠনিকতার মাধ্যমে উদ্বোধেনের অপেক্ষায় রয়েছে। উক্ত কলেজটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন তাঁর মেয়ে ডাঃ তাছলিমা আহমেদ মুন্নি।
পাশেই রয়েছে মনোরম পরিবেশে বিশাল আকৃতির একটি এবং ছোট আকৃতির ৪টি গম্বুজ নিয়ে গঠিত ফাতেমা খানম জামে মসজিদ। সামনে রয়েছে অত্যান্ত মনোরম একটি মাঠ যাহার সৌন্দর্য পর্যটকদের মন কারতে বাধ্য করেছে। মসজিদটি ২০১২ সালে স্থাপিত হয় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেন। ভোলা সদর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দুরে বাংলাবাজারে অবস্থিত। স্থলপথের যে কোন যানবাহনের মাধ্যমে মসজিদের দ্বার প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া যায় অনায়াসে।
কমপ্লেক্সে রয়েছে আধুনিক নির্মাণশলিী দিয়ে নির্মিত স্বাধীনতা যাদুঘর যেখানে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি, স্বাধীনতা আন্দোলন, তোফায়েল আহমেদের বর্নাঢ্য রাজনীতি জীবনের সকল অর্জনের চিত্র, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ডকুমেন্টরী, ভিতরে রয়েছে, সভাকক্ষ, লাইব্রেরী। শুধু স্বাধীনতা আন্দোলন নয় স্বাধীনতা অর্জনের পেছনের ৮০ বছরের ইতিহাসের ধারাবাহিক দুর্লভ সংরক্ষণ রয়েছে এই জাদুঘরটিতে। এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এরপর ২৫ জানুয়ারী (২০১৮) রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আনুষ্ঠানিকভাবে জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে জাদুঘরটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়।
জাদুঘরটিতে তিনটি গ্যালারি রয়েছে। প্রথম তলার গ্যালারিতে এক পাশে ইতিহাস ঐতিহ্য, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ৪৭-এ দেশভাগ ও ভাষা আন্দোলনের দুর্লভ ছবি ও তথ্য রয়েছে। অপরপাশে রয়েছে লাইব্রেরি ও গবেষণাগার। এছাড়া একই তলায় রয়েছে মাল্টিমিডিয়া ডিসপ্লে হলরুম। যেখানে প্রদর্শীত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র ও চলচ্চিত্র। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত ইতিহাসের মুহূর্তগুলোর চিত্রকল্প। তৃতীয় তলায় রয়েছে ৫৮ ও ৬৬-এর আন্দোলন। এছাড়া ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ৭ মার্চের ভাষণসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের আত্মত্যাগের দুর্লভ সব আলোকচিত্র। এছাড়া জাদুঘরটির একটি অংশে বাঙালির লোকজ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে। জাদুঘরটিতে দর্শনার্থীরা ডিজিটাল টাচস্কিন ব্যবহার করে যে কোনো গুরত্বপূর্ণ মুহূর্ত ও তথ্য জানতে পারছেন। দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার পাশাপাশি জাদুঘরটিতে আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তির বিন্যাস ঘটানো হয়েছে। প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসীর মামুনসহ বেশ কয়েকজন গবেষকের নিরলস পরিশ্রমে জাদুঘরটি অন্যতম সংগ্রহশালায় পরিণত হয়েছে।
ভোলার স্বাধীনতা জাদুঘরে আসলে যে কোন মানুষের হৃদয় নাড়া দেবে এমনটাই বললেন জাদুঘরটির স্বপ্নদ্রষ্টা ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তার মতে এখানে আসলে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বর্তমান বাংলাদেশকে জানার সুযোগ পাবে পর্যটকরা।
আর্তমানবতার সেবায় প্রতিষ্ঠিত ‘তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশনে’ তাঁর সব স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ দান করার ঘোষণা দিয়েছেন।
তোফায়েল আহমেদ (এম.পি) তার মা’কে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। মা-ই ছিলেন তার বাঁচার অবলম্বন ও পথ চলার প্রেরণা। মায়ের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা তার মাঝে জাগিয়েছে দেশের প্রতি, মায়ের প্রতি মমতা। মমতাময়ী মায়ের স্মরণে গড়ে তুলেছেন কমপ্লেক্সে বৃদ্ধাশ্রম যাহা অত্যান্ত মনোরম পরিবেশ বিরাজ করছে। এ বৃদ্ধাশ্রমে বসবাসরতদের সম্পূর্ণ খরচ তোফায়েল আহমেদ ফাউন্ডেশন বহন করে
সমাজে এমন কিছু অসহায় মা আছেন বৃদ্ধ বয়সে পরিবারের স্নেহ, যত্ন, ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত সেই সব ভাগ্যাহত মায়েদের তিনি রাখতে চান একটা সুন্দর, আনন্দময় ও পারিবারিক পরিবেশে। সমাজের অবহেলিত এবং অসহায় বৃদ্ধা মায়েরা যেন শেষ জীবনটা সুখে ও যত্নে কাটাতে পারেন সেজন্য ভোলা, বাংলাবাজার উপশহর এলাকায় নিজস্ব উদ্যোগে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন “ফাতেমা খানম বৃদ্ধাশ্রম”। এখানে রয়েছে পারিবারিক পরিবেশে থাকা-খাওয়ার সু-ব্যবস্থা, প্রত্যেক মায়েদের জন্য রয়েছে আলাদা বিছানা, আলমারি, টেবিলসহ আরও অনেক আধুনিক সুবিধা। বিনোদনের জন্য রয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। রয়েছে সার্বক্ষণিক ডাক্তার, নার্স ও এ্যাম্বুলেন্স সুবিধা। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য বৃদ্ধাশ্রম ও আশেপাশের এলাকা ২৪ ঘন্টা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়। কলেজ সংলগ্ন রয়েছে ফাতেমা খানম সরকারী এতিমখানা (বালক) যেখানে এতিমদেরকে আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে গড়ে তুলছেন মানবিক মানুষ। এখানে রয়েছে ১০ শয্যা বিশিষ্ট্য ফাতেমা খানম মা ও শিশু স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র যেখানে গর্ভবতী মায়েদের আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছ্।
কাম্পাস থেকে আরেকটু সামনে এগিয়ে গেলে দেখা যাবে ফাতেমা খানম নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রসা। উক্ত মাদ্রসাটি কলেজ সভাপতির সঠিক নির্দেশনায় মোহতামিম হাফেজ আব্দুল্লাহ সঠিকভাবে পরিচালনা করে আসছেন। কমপ্লেক্সের পাশেই রয়েছে ফাতেমা খানম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এভাবেই তিনি কমপ্লেক্সটিকে সাজিয়ে মায়ের প্রতিবিম্ব দেখার প্রয়াস ঘটিয়েছেন।

ফেসবুকে লাইক দিন