আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে চান? - বিস্তারিত
ঢাকা আজঃ শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং, ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
সর্বশেষঃ

সাইবার অপরাধ বা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন – ২০১৮

সাইবার অপরাধ দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রতিনিয়ত দেখছি সাধারণ মানুষ অনিচ্ছাকৃতভাবে এই অপরাধের শিকার হচ্ছেন। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জানা উচিত, আইন না জানা কোন defence বা প্রতিরক্ষা নয়। শুধুমাত্র শেয়ারের মাধ্যমেই একটি ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হতে পারে। ফেসবুক ও স্যোসাল মিডিয়া সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল প্রচলিত আইন (ধারা- ২১, ২৩, ২৪, ২৫,২৬, ২৮,২৯ এবং ৩১) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর আলোকে সংক্ষিপ্ত সাবলীল ভাষায় আলোচনা।

ধারা-২১ অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রপাগান্ডা ও প্রচারণা চালান বা উহাতে মদদ প্রদান করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ১০ বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ধারা ২৩ অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করিয়া প্রতারণা করে তাহলে অনধিক ৫ বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

ধারা ২৪ অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে প্রতারণা বা ঠকাইবার জন্য বা কোন সম্পত্তি প্রাপ্তি বা অন্যের ক্ষতির জন্য পরিচয় প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণ করে, তবে সবোর্চ্চ ৫ বছরের জেল বা ৫ লক্ষ পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

ধারা ২৫ অনুযায়ী, ডিজিটাল মাধ্যমে কোন ব্যক্তি যদি আপত্তিজনক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শনকারী তথ্য-তথ্য প্রেরণ করে তবে তাকে সবোর্চ্চ ৩ বছরের জেল বা ৩ লক্ষ পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

উক্ত আইনের ২৬ ধারা অনুসারে, আইনী কর্তৃপক্ষ ব্যতীত কেউ যদি অনুমতি ব্যতীত পরিচয় তথ্য ব্যবহার করেন (এতে কোনও বাহ্যিক, জৈবিক বা শারীরিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে) ব্যবহার করেন, তাকে সবোর্চ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে বা উভয় দন্ড হতে পারে।

একই আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত বা উস্কানি প্রদানের জন্য কিছু প্রচার বা প্রকাশ করে বা অন্যকে দিয়ে করান, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি সবোর্চ্চ ৫ বৎসর কারাদণ্ড বা সবোর্চ্চ ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

উক্ত আইনের ২৯ ধারা অনুসারে, কেউ যদি মানহানি সম্পর্কিত তথ্য প্রচার করে, সম্প্রচারিত করে তবে তাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

একই আইনের ৩১ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ফেসবুক বা ডিজিটাল বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান, যার ফলে বিভিন্ন শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে অথবা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়, তাহলে সবোর্চ্চ ৭ বৎসর কারাদণ্ডে, বা সবোর্চ্চ ৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ধারা ২৫ এবং ২৯ এর অধীনে অপরাধগুলো আমলঅযোগ্য (অর্থাৎ মামলা করতে হবে কোর্টে)এবং জামিনযোগ্য। অন্যদিকে, ২১, ২৩, ২৪, ২৬,২৮ ও ৩১ ধারার অপরাধগুলো আমলযোগ্য (অর্থাৎ মামলা থানায় করা যাবে) এবং জামিন অযোগ্য অপরাধ।

সংক্ষেপে ও সাবলীল ভাষায় লিখার উদ্দেশ্য হলো সবাই যেন বুঝতে পারে ও অপরাধ থেকে বেঁচে থাকতে পারে।
——————————
মনির আহাম্মেদ ( এল এল বি)

ফেসবুকে লাইক দিন