আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে চান? - বিস্তারিত
  • শনিবার, ৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ইং, ২৮শে জমাদিউস-সানি, ১৪৪৭ হিজরী
সর্বশেষঃ

ভোলা–বরিশাল সেতু: এক প্রজন্মের স্বপ্ন, বেদনা ও ভবিষ্যতের পথে জনতার জাগরণ- মোঃ মহিউদ্দিন

নিিউজ ডেস্ক: দ্বীপ জেলা ভোলা—নদী ও সাগর বেষ্টিত এক অপার সম্ভাবনার জনপদ। প্রকৃতির দান, কৃষি, মৎস্য, গ্যাস—সবই আছে; নেই শুধু যেটা একটি জনগোষ্ঠীর পথচলার গতি নির্ধারণ করে, তা হলো অবকাঠামোগত সংযোগ। সেই সংযোগের কেন্দ্রে বহুদিন ধরেই ভোলাবাসীর একটিই দাবি—ভোলা–বরিশাল সেতু।
এই দাবিটা শুধু উন্নয়নের একটি প্রকল্প নয়; এটি বহু বছরের বঞ্চনার বিরুদ্ধে উচ্চারিত একটি সম্মিলিত আর্তনাদ, ভবিষ্যতের প্রতি অসম্ভব বিশ্বাস, আর প্রজন্মের নীরব কান্নার প্রতিধ্বনি। এক টুকরো ভোলা আজ ঢাকায় অবস্থানরত ভোলার মানুষগুলো আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়েছে একটি শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে। শহরের কোলাহলের ভেতর এক টুকরো ভোলা যেন জমে উঠছে সেখানে—স্বজনের মুখ, বাড়ির পরিচিত গন্ধ, জন্মভূমির টান। দুপুর ৩টার মানববন্ধনে অংশ নিতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল । এই ডাক শুধু উপস্থিতির নয়, এটি শেকড়ে ফেরার আহ্বান—“দাবি আমাদের একটাই, ভোলা–বরিশাল সেতু চাই।” বঞ্চনার দীর্ঘ পথ, দাবির দীর্ঘ ইতিহাস– দ্বীপ জেলা ভোলার মানুষের জীবনে যোগাযোগ একটি অনিবার্য দুর্ভোগ। এক জেলার সঙ্গে আরেক জেলার দূরত্ব নদী পাড়ি দিলেই ফুরোতো, কিন্তু বাস্তবতায় তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা, নিরাপত্তাহীন যাত্রা, আর অনিশ্চিত সময়ের সমন্বয়। ভোলার কৃষক, ব্যবসায়ী, ছাত্র, চিকিৎসা-সেবা প্রত্যাশী মানুষ—সবাই এই দুর্ভোগের সাক্ষী। আর তাই ভোলাবাসীর কাছে সেতু মানে শুধু কংক্রিটের কাঠামো নয়; এটি বেঁচে থাকার পথকে সহজ করে তোলা, উন্নয়নকে গতিশীল করা, আর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার প্রতীক। মানববন্ধনে উচ্চারিত হচ্ছে এক স্বর—এ মানববন্ধনের মূল শক্তি তার শান্তিপূর্ণ ঐক্য। যেখানে তরুণ–তরুণী, প্রবীণ, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী—সবার কণ্ঠ মিলে উচ্চারিত হচ্ছে এক স্লোগান: “ভোলা–বরিশাল সেতু চাই।” এটা দাবি, কিন্তু একই সাথে দৃঢ় প্রত্যয়। বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, অথচ শোভন ভাষায়, সাম্যবোধে, নাগরিক চেতনায়। স্বপ্নের সেতু: নতুন সম্ভাবনার পথ ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ হলে—ভোলার কৃষিপণ্যের বাজার আরও বিস্তৃত হবে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটবে শিল্প, পর্যটন ও বিনিয়োগে আসবে গতিলাখো মানুষের যাতায়াত সহজ হবে জরুরি চিকিৎসা ও শিক্ষা সেবায় তৈরি হবে সরাসরি সুযোগ এই সেতু শুধু ভোলাকে নয়, পুরো দক্ষিণবাংলাকে বদলে দিতে পারে। সেই বিশ্বাস থেকেই মানুষের কণ্ঠে বারবার ধ্বনিত হয়— “এটা উন্নয়নের দাবি নয়, এটা বেঁচে থাকার অধিকার।” ঐক্যের ডাক— আজকের মানববন্ধন শুধু একটি দিনের কর্মসূচি নয়— এটি একটি দীর্ঘ আন্দোলনের নতুন অধ্যায়। যেখানে মানুষ হাত ধরাধরি করে বলতে চায়— আমাদের স্বপ্ন বাস্তব হোক আমাদের সন্তান নিরাপদ পথ পাক ভোলার উন্নয়ন দেশের উন্নয়ন হোক ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আর বঞ্চনার ইতিহাস না বয়ে বেড়াক শেষ কথা: উপস্থিতির গুরুত্ব— মানববন্ধনে উপস্থিতি মানে শুধু শারীরিক উপস্থিতি নয়— এটি সচেতনতার ঘোষণা, ভালোবাসার প্রকাশ, আর দাবির প্রতি দায়িত্ববোধ। “আপনার একবারের উপস্থিতি আমাদের আগামীর পথ বদলে দিতে পারে।” এই বাক্য শুধু আহ্বান নয়—এটি এক সত্য। আজ দুপুর ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জমা হচ্ছে ভোলার মানুষের স্বপ্ন। সেখানে দাঁড়িয়ে প্রতিটি মানুষ উচ্চারণ— “দাবি আমাদের একটাই—ভোলা–বরিশাল সেতু চাই।” আপনার উপস্থিতিই হতে পারে আগামী দিনের ইতিহাস রচনার সূচনা।

ফেসবুকে লাইক দিন