বোরহানউদ্দিনে ভাষা সৈনিক রেজা-এ-করিম চুন্নু মিয়ার সমাধিতে এমপি মুকুলের শ্রদ্ধা নিবেদন
ভোলার খবর ডেস্কঃ কুতুবা মিয়া বাড়ীর কৃতি সন্তান, ভাষা সৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম রেজা-এ করিম চুন্নু মিয়ার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার রায়হান উজ্জামান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মহব্বত জান চৌধুরী, থানা ইন-চার্জ মো. শাহীন ফকির, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজা ইয়াসমিন প্রমূখ সহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ।
উল্লেখ্য, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা ইউনিয়নের আব্দুল জব্বার মিয়া বাড়িতে ১৯৩১ সালে জন্মগ্রহণ করেন ভোলার একমাত্র ভাষা সৈনিক রেজা-এ-করিম চৌধুরী চুন্নু মিয়া। এ ভাষা সৈনিক আওয়ামী লীগ থেকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমএলএ) নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন ভোলার মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সারির সংগঠক। এছাড়া স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন।
এ ভাষা সৈনিকের পুরো নাম রেজা-এ-করিম চৌধুরী চুন্নু। কিন্তু চুন্নু স্যার নামে তিনি সমধিক পরিচিত। তার ব্যক্তিগত ডায়রি ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিনি ঢাকা কলেজে অধ্যয়ন করার সময় মাত্র ১৯ বছর বয়সে ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ১৯৫২ সালে জিন্নাহর রাষ্ট্র ভাষা উর্দূ ঘোষণার পর তার মধ্যে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠল। তখন তিনিসহ তার এক সহপাঠীরা তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা কলেজের ভিপি ইকবাল আনসার হেনরীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একাত্বতা ঘোষণা করে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।
বায়ান্ন’র ২১ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকেই ছাত্র নেতৃবৃন্দের পরামর্শ অনুযায়ী ৮/১০ জনের খণ্ড মিছিল শুরু হল। তাদের কলেজের তৃতীয় ব্যাচের মিছিলে ছিলেন তিনি। মিছিল যখন কলাভবনের কাছে পৌঁছল তখন তাকে সহ অনেককে আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। রাতে তাদের ফাঁড়িতে অবস্থান করতে হয়। সকালে পুলিশ তাকে সহ অন্যদের পুলিশ ভ্যানে করে কোর্টে নিয়ে যায়। কোর্টে হাজির না করেই এক ঘণ্টার মধ্যে তাদের কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হল। এরপর এক মাস কারাভোগের পর ২১ মার্চ মুক্ত আকাশের চোখ দেখেন।
এ মানুষটি বিনা বেতনে শিক্ষাকতা করেছেন বোরহানউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আব্দুল জব্বার কলেজে। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী এ ব্যক্তি পৃথিবী ছেড়ে চলে যান ২০০৭ সালের ২ মার্চ শুক্রবার।