আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে চান? - বিস্তারিত
ঢাকা আজঃ শনিবার, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ ইং, ২০শে মুহাররম, ১৪৪৬ হিজরী
সর্বশেষঃ

একুশে ফেব্রুয়ারি যে ভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেল

বিপ্লব মন্ডলঃ প্রতি বছর ২১ শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। যা ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ কতৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এটি শহীদ দিবস হিসেবেও পরিচিত। এ দিনটি বাঙালী জনগনের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতি বিজড়িত একটি দিন। ১৯৫২ সালের এই দিনে ( ৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা করার দাবিতে ঢাকায় আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলি বর্ষনে অনেক তরুন ছাত্র শহীদ হন। যাদের মধ্যে রফিক,জব্বার, সফিক,সালাম, বরকত উল্লেখযোগ্য। এই কারনে এই দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে পরিচিত।
কিন্তু আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হল কি ভাবে?
১৯৯৮ সালে কানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরে বসবাসরত দুই প্রবাসী বাঙালী রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম একুশে ফেব্রুয়ারি কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে আবেদন জানিয়েছিল তৎকালীন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে।
সে সময় মহাসচিবের প্রধান তথ্য কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন হাসান ফেরদৌস। তার নজরে আসে রফিকুল ইসলামের আবেদন পত্রটি। তিনি ১৯৯৮ সালের ২০ জানুয়ারী রফিকুল ইসলামকে অনুরোধ করেন তিনি যেন জাতিসংঘের অন্য কোন সদস্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে একই ধরনের প্রস্তাব আনার ব্যবস্থা করেন। পরে রফিকুল ইসলাম আব্দুস সালামকে সাথে নিয়ে ” মাদার ল্যাগুয়েজ লাভার্স দ্যা ওয়ার্ল্ড ” নামে একটি সংগঠন দাড় করান। এতে একজন ইংরেজিভাষী, একজন জর্মানভাষী,একজন ক্যান্টোনিভাষী সদস্য ছিলেন। রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম আবারো ” মাদার ল্যাগুয়েজ লাভার্স দ্যা ওয়ার্ল্ড ” সংগঠনের মাধ্যমে কফি আনানকে চিঠি লেখেন এবং চিঠির একটি কপি জাতিসংঘের কানাডীয়ান দূত ফাওলার কাছে প্রেরণ করেন। ১৯৯৯ সালে রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম ইউনেস্কোর আনামারিয়ার সাথে দেখা করেন। আনামারিয়া পরামর্শ দেন তাদের প্রস্তাব জাতিসংঘের ৫ টি সদস্য দেশ—- কানাডা, ভারত, হাঙ্গেরি, ফিনল্যান্ড ও বাংলাদেশ দ্বারা আনীত হতে হবে। তখন রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে যোগাযোগ করে প্রস্তাব করান এবং বাংলাদেশের প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দানে ২৯ টি দেশকে অনুরোধ জানাতে কাজ করেন।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। সেই প্রস্তাবে ১৮৮ টি দেশ সমর্থন জানায়। যার ফলে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
২০০০ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্য দেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে।
২০১০ সালের ২১ শে অক্টোবর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৫ তম অধিবেশনে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। প্রস্তাবে বলা হয়,” এখন থেকে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে জাতিসংঘ পালন করবে”।

ফেসবুকে লাইক দিন