রাজাপুরে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে কথিত প্রেমিকাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা
মশিউর রহমান রাসেল ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বারবাকপুর এলাকার ছিদ্দিক মৃধার ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী নাঈম ২৩ কে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগে কথিত প্রেমিকাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সিদ্দিক মৃধা বাদী হয়ে রাজাপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামী করা হয়েছে কথিত প্রেমিকা ফারজানা আক্তার (২১), ফয়সাল (২৪), ফারুক হাওলাদার (৫৭), রেবা বেগম (৪৫), লুত্ফর রহমান (৫৫) কে। নাঈমের বাবা ছিদ্দিকুর রহমান ২৫ ডিসেম্বর সোমবার রাজাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে ছিলেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি রেকর্ড করলেও শনিবারে তা জানাজানি হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাঈম সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছিলেন। কথিত প্রেমিকা ফারাজানার সাথে নাঈমের ৮ বছরের প্রেম। ২০১৭ সালে প্রেমিকা ফারজানাকে অন্যত্র বিয়ে দেয় তার পরিবার। কিন্তু ফোনের মাধ্যমে নাঈমের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখে ফারজানা। সর্বশেষ সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে পুনরায় চলতি বছরের ১৪নভেম্বর তার কর্মস্থল সিঙ্গাপুর চলে যায় নাঈম। কথিত প্রেমিকা ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে ২৭ নভেম্বর দেশে ফিরিয়ে আনে নাঈমকে। পরিবার দেশে এত দ্রুত ফেরার কারন জানতে চাইলে, ফারজানার সাথে ৮ বছর ধরে প্রেম এবং তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে বলে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায় নাঈম। নাঈমের বাবা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছে বলে এবং নাঈমের ভবিষ্যত জীবন নষ্ট না কারার অনুরোধ জানান। এতে অভিযুক্ত কথিত প্রেমিকার পরিবার নাঈমের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ধরনের দোষারোপ করে । ১৪ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ১২ টার দিকে কথিত প্রেমিকা ফারাজানার মোবাইল ফোনের ম্যসেজের মাধ্যমে বাড়িতে নাঈমকে ডেকে নেয় ও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মিলে মারধর করে এবং বলতে থাকে সকাল হলেই সমস্ত এলাকাতে বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হবে। এতে নাঈম ও তার পরিবারের মান সম্মান নষ্ট হয়ে যাবে। কারোও কাছে মুখ দেখাতে পারবে না। মরে যাওয়াই ভাল এসব বলতে থাকে । এসময় নাঈমের ডাক চিত্কার শুনে নাঈমের দুলাভাই ইকবাল গিয়ে উদ্ধার করে নাঈমকে তাৎক্ষণিক এলাকার প্লল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। এসময় ঘরে কেউ না থাকায় আসামীরা নাঈমের বাবার বসত ঘরে আগুন দিয়ে সম্পূর্ণরুপে পুড়ে ভূস্মিভূত করে দেয় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। পরে আসামীরা থানায় অভিযোগ দিয়ে হয়রাণি করে। ৮ বছর প্রেম করে বিয়ে করতে না পারা ও প্রেমিকার বাবা ভাইর বেধরক মারধরের ১দিন পর বিচার না পেয়ে মানুষের নানা রকম অপমান সইতে না পেরে বিষ পান করে। বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ডিসেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
উল্লেখ্য, নাঈম ১৫ ই ডিসেম্বর বিষপান করলে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শেবাচিম এ রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। ১৬ ই ডিসেম্বর দুপুরে বরিশাল শেবাচিমে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু বরন করে নাঈম।
কথিত প্রেমিকা ও অভিযুক্ত বক্তিগন নাঈমের মৃত্যুর পর থেকে আত্নগোপনে থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
রাজাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান মামলার বিষটি নিশ্চিত করে বলেন, মামলা রেকর্ড হয়েছে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।