ঝালকাঠিতে স্কুল শিক্ষিকাকে হত্যা চেস্টা মামলা তুলে নিতে হুমকি
![](https://www.bholarkhobor.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
মশিউর রহমান রাসেল (ঝালকাঠি প্রতিনিধি): ঝালকাঠি শাহী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুনা খানমকে আদালত থেকে হত্যা চেস্টা মামলা তুলে নেয়ার জন্য উপর্যপুরি হুমকি দিয়ে যাচ্ছে মামলার আসামী মাে. আতিকুল ইসলাম ওরফে স্বপন (৩৮)। আতিক ও তার সহযােগিদের হুমকিতে দুটি নাবালক শিশু সন্তান নিয়ে রুনা খানম নিরাপত্তাহীনতায় আতংকে দিন কাটাচ্ছে। এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি করা হলেও হুমকি দাতা আসামী আতিককে আটক করা হয়নি।
গত ৪ এপ্রিল সকাল ১০ টার দিকে শহরের রােনালস রােডের নিজ বাসা থেকে বাহের রােড শাহী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে সেকশন কালিবাড়ির সামনে রুনা খানমের (৩০) পথরােধ করে তার পেট ও বুকে হত্যার উদ্দশ্যে ৬টি আঘাতে গুরুতর জখম করে তার সাবেক স্বামী আতিকুল ইসলাম। রক্তাক্ত জখম হয়ে শিক্ষিকা রুনা খানম রাস্তায় লুটিয়ে পরে। স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল নিয়ে যায়। অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানাে হয়। ঘটনার সময় সাধনার মাড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের এটিএসআই শাখাওয়াত হাসেন স্থানীয়দের সহযােগিতায় রক্তমাখা ছুড়িসহ আতিকুল ইসলামকে আটক করে থানায় সাের্পদ করেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আহত রুনা খানমের বড় বােন রােজি খানম (৩৮) বাদী হয়ে আতিকুল ইসলামকে একমাত্র আসামী করে ঝালকাঠি থানায় একটি হত্যা চেস্টা মামলা দায়ের করে। এ মামলায় গ্রেফতার দখিয়ে ৫ এপ্রিল ২০২৩ আতিকুল ইসলামকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানাে হয়। প্রায় চারমাস জেল হাজত থাকার পর হাইকার্ট থেকে জামিন লাভ করে আতিক। এদিকে এরই মধ্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার এস আই মাসুদ রানা গত ৩০ জুন আতিককে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ঝালকাঠির আমলী আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে মামলাটি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আদালত প্রেরণ করে। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রট মাে. পারভেজ শাহরিয়ার আসামীর বিরুদ্ধ অভিযােগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন। সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পরার পর থেকেই আতিক এবং তার সহযাগিরা স্কুলে যাওয়া আসার পথ রুনা খানমকে নানা রকম হুমকি এবং রাস্তাঘাট অনুসরণ করা শুরু করে। শুধু হুমকি বা অনুসরন নিয়ে রুনা খানম অভিযােগ করে বলেন, “ জামিন পাওয়ার পর থেকে আতিক একাধিকবার আমাকে সরাসরি মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিয়েছে। আমার বাসায় লােক পাঠিয়ে আমার শিশু দুই সন্তানকে অপহরণের হুমকি দিয়ে বলছে “ একবারতাে জানে বেচেঁ গেছাে, এবার আর জানে বাচঁতে পরবিনা ”। রুনা খানম আরও বলেন, আতিকের ভয়ে শিশু সন্তানদের নিয়ে বাসার বাইরে বের হই না, শুধু ভয় ভয় স্কুলে যাই। ম্যাজিস্ট্রট আদালতে জামিন বাতিলের আবেদন করেছি কােন লাভ হয়নি। আতিক হাইকাের্ট থেকে জামিন পেয়েছে তাই ম্যাজিস্ট্রট আদালত তাঁর জামিন বাতিল করেনি। সর্বশেষ আতিক গত ২৪ নভম্বর রুনা খানমকে স্কুলে যাওয়ার পথে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি প্রদান করে। ওই দিনই রুনা খানম ঝালকাঠি সদর থানায় একটি জিডি করন। জিডি নং ১০৩৩ তারিখ ২৪/১১/২০২৩। উল্লখ্য, গত ২০২১ সালর ১৮ জুলাই আতিক ও রুনার দ্বিতীয় বিয়ে হয় এবং পারিবারিক কলহের কারনে পরের বছর ২০২২ সালের ১৫ জুন বিবাহ বিছদ হয়। রুনার আগের ঘরের দুটি সন্তান আছে। আতিক পুনরায় রুনাকে নিয় ঘর সংসার করতে চাইলেও রুনা তা প্রত্যাখান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার জন্য রুনার ওপর হামলা চালায় আতিক। অভিযুক্ত আতিকুল ইসলাম আতিক বলেন, জামিন পেয়ে আমি তাকে (রুনাকে) কােন হুমকি দেইনি, তবে লােক মারফত সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য অনুরােধ করেছি, এটা অপরাধের কিছু নয়। ঝালকাঠি সদর উপজলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান ইয়েন বলেন, প্রকাশ্য দিবালাকে আতিকুল ইসলাম আমাদের সমিতির সদস্য রুনা খানমকে কুপিয়ে হত্যার চেস্টা করছে। আমরা আতিকের কঠাের বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। এখন আবার হুমকি দিচ্ছে। প্রশাসন যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে আমরা আবার রাস্তায় আন্দোলন করবাে। রুনা খানমের জিডির তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার এস.আই মাে. সাখাওয়াত হােসেন বলেন, জিডির তদন্তের অনুমতি চেয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আদালতে আবেদন করছি। এখনও অনুমতি পাইনি।