ভোলা-২ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন, এমপি মুকুল
ভোলার খবর ডেস্ক: আলী আজম ১৯৭২ সালের ৩ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদের ভাতিজা। আলী আজম পারিবারিক ভাবে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি দৌলতখান পৌরসভার মেয়র ছিলেন। ২০১৪ সাধারণ নির্বাচনে আলী আজম ১ম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ভোলা-২ আসন, এ আসন থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর প্রথম নির্বাচন করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছিলেন। তার পর থেকে অধিকাংশ সময় এ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে আছে। বলতে গেলে এই আসনটি আওয়ামী লীগের একটি শক্ত ঘাঁটি।
বেশির ভাগ সময় আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিক, বঙ্গবন্ধুর ঘানিষ্ঠ সহচর, সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও তার বড় ভাইয়ের ছেলে আলী আজম মুকুল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আসন্ন নির্বাচনেও এই আসনটিতে তার বিজয় নিশ্চিত করতে এলাকায় উন্নয়নের পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী হিসাবে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তাও রয়েছে।
ভোলা-২ আসনটি দুইটি উপজেলা নিয়ে গঠিত। উপজেলা ২টি হচ্ছে দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন। নারী ও পুরুষ সব মিলিয়ে ভোলা-২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৩ জন প্রায়।
ভোলা নির্বাচন অফিস থেকে পাওয়া রেকর্ডে জানা যায়, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই আসন থেকে ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালের ৭ মে’র নির্বাচনে এবং ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ২৭ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে প্রবীণ রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সনের ১২ জুনের নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো তোফায়েল আহমেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এছাড়া ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর তোফায়েল আহমেদ পুনরায় ভোলা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ আলী আজম মুকুল এমপি নির্বাচিত হন। সবশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনেও বিএনপির প্রার্থী হাফিজ ইব্রাহিমকে হারিয়ে পুনরায় নির্বাচিত হন আলী আজম মুকুল।
ভোলা-২ আসনে তার জনপ্রিয়তা শীর্ষে রয়েছে। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি মানবতার ফেরিওয়ালা ও তৃণমূলের গণমানুষের বন্ধু হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি এলাকার মানুষকে ব্যাপক সময় দেন। যখনই এলাকায় থাকেন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মানুষ তাকে ঘিরে রাখেন। কোনো বাধা ছাড়াই সাধারণ একজন মানুষ তার কাছে গিয়ে কথা বলার সুযোগ পান। শুধু তাই নয়, সংসদ সদস্য মুকুল নির্বাচনী এলাকার গ্রামগঞ্জে একেক দিন একেক এলাকায় গিয়ে অতি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের সুখ দুঃখের কথা শোনেন। তাদের সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করেন। গরিব অসহায় অসুস্থ মানুষের নীরবে তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে মেঘনার পাড়ে ব্লক স্থাপন, ২টি কলেজ ও একটি হাই স্কুল জাতীয়করণসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়েছেন। ২০০১ সালের পর বিএনপির জোট ক্ষমতায় এলে দৌলতখান বোরহানউদ্দিন ছিল আতংকিত জনপদ। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছিল ঘর ছাড়া। হামলা-মামলা, নারী নির্যাতন, জবর দখল, বাড়ি ঘরে আগুন লুটপাট থেকে শুরু করে এমন কোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নেই যা সেখানে হয়নি।
কিন্তু আলী আজম মুকুল এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রতিহিংসার রাজনীতি করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এখন আর সেই আগের মতো সংঘাতের ঘটনা নেই। এখানকার আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের কাছে আলী আজম মুকুল অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসাবে তাদের হৃদয়ে রয়েছে। তারা মনে করছেন, আগামীতে বিএনপি জোটের প্রার্থীর বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে সংসদ সদস্য আলী আজমের কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচন প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোয়ন দিয়ে ভোলায় পাঠালে আমার নির্বাচনী এলাকার জণগণের দাবি ছিল সিসি ব্লকের মাধ্যমে নদী ভাঙন রোধ এবং টেকসই বেড়িবাঁধ। এলাকার জনগণের সেই দাবি পূরণে মেঘনার ভাঙন রোধে ৫৫২ কোটি টাকার সিসি ব্লক বরাদ্দ পাই। পরে আবার ৫২২ কোটি টাকার ব্লক অনুমোদন দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যার কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া দুটি কলেজ দুটি স্কুল জাতীয়করণ করা হয়েছে। একাধিক স্কুল এমপিওভুক্ত হয়েছে। আমার এলাকার জণগণকে সামাজিক নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রেখেছি। বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখানে আওয়ামী লীগ এখন সুসংগঠিত। প্রতিনিয়ত গণসংযোগ করে তিনি আসনটিকে দলের দুর্গে পরিণত করেছেন বলেও জানান।
বিএনপি থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে হাফিজ ইব্রাহিম মনোনয়ন পায়নি। তার বদলে বিএনপি জোট থেকে বিজেপির প্রার্থী আশিকুর রহমান শান্ত মনোনয়ন পেয়ে ধানের শীষে নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে ধানের শীষে প্রতিক নিয়েও হেরে যান তিনি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসন থেকে মনোনয়ন পান বিএনপি নেতা হাফিজ ইব্রাহিম। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলী আজম মুকুলের কাছে হেরে যান।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী মানবতার মা শেখ হাসিনার কাছে ঐতিহ্যবাহী এ আসনের জনগনের প্রত্যাশার এবারও আলী আজম মুকুলকে নৌকার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়ে আসনটিকে পূনরায় নৌকার ঘরে নেয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন।