কাউখালীতে যমজ ৩ সন্তান নিয়ে দিশেহারা দিনমজুর দম্পত্তি
কাউখালী (পিরোজপুর)প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সয়না-রঘুনাথপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বেতকা গ্রামের দিনমজুর নুর মোহাম্মদের কন্যা মিলি বেগমের ঘর আলোকিত করে একসঙ্গে জন্ম নিয়েছে তিনটি পুত্রসন্তান। একসঙ্গে তিন ছেলে সন্তান পেয়ে দারুণ খুশি হয়েছিলেন হতদরিদ্র পরিবারটি। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই তাদের সে আনন্দে ভাটা পড়েছে। দিনমজুর পরিবারের তিন সন্তানের দুধ যোগাতেই নাভিশ্বাস উঠছে পরিবারটির। তারপর চিকিৎসা খরচ। এ নিয়ে চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছে পরিবারটি। সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখতে সমাজের বিত্তবানদের সাহায্য চান হতদরিদ্র মিলি- ইউছুফ দম্পতি।
জানা গেছে, গত ২ মে বরিশাল মেট্রোপলিটন ক্লিনিকে সিজারে তিনটি সুস্থ পুত্রসন্তানের জন্ম দেন উপজেলার দক্ষিণ বেতকা গ্রামের দিনমজুর নুর হোসেনের মেয়ে মিলি বেগম (২৯)। পরিবারে নতুন সদস্যের আগমনে খুশিতে আত্মহারা ইউছুফ-মিলি দম্পতি সন্তানদের নাম রাখেন ঈসা, মুছা ও ইয়াছিন। এখন তিন সন্তানকে লালন-পালন করতে যে খরচ, তা তিনি রোজগার করতে পারেন না। পাঁচ মাস বয়সী ওই তিন শিশুর লালন-পালন ও চিকিৎসা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। এ ছাড়া পাঁচ বছর বয়সী বায়েজিদ নামে আরো একটি পুত্রসন্তান রয়েছে তাদের।
স্থানীয়রা জানান, বিয়ের পর থেকে অধিকাংশ সময়ই মিলি তার দরিদ্র বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। তার স্বামী বাউফলে নিজ বাড়িতে থেকে দিনমজুরের কাজ করে মাঝেমধ্যে কিছু খরচের টাকা পাঠান। এর বছর খানেক পর তাদের পরিবারে একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এমনিতেই তিনজনের সংসারে অভাবের শেষ নেই। তার ওপর আরো তিনটি যমজ শিশুসন্তান নিয়ে দরিদ্র পরিবারটি এখন দিশেহারা।
মিলি বেগম বলেন, আল্লাহ আমার ঘরে ফুটফুটে তিনটি পুত্রসন্তান দিয়েছেন। এই তিনটি সন্তান জন্মের সময় ধারদেনা করে আমরা এখন খুব বিপদে আছি। এদের মুখের দিকে তাকালে ওদের খাবারের জন্য কষ্ট দিতে পারছি না। কিন্তু আমাদের সামর্থ্য নেই তাদের পরিপূর্ণ খাবারের ব্যবস্হা করার।
সন্তানদের বাবা ইউছুফ বলেন, যমজ তিন সন্তান লালন-পালনের জন্য প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টাকার মতো লাগে। এর ওপর পাঁচ বছর বয়সী ছেলেসহ আমাদের নিজেদেরও তো পেট আছে। আমি দিনমজুরের কাজ করে প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকা আয় করি। আবার সবসময় কাজও থাকে না।
এ বিষয়ে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লা বলেন, হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া যমজ তিন শিশু নিয়ে তার মা আমার কাছে এলে আপাতত ব্যক্তিগতভাবে বাচ্চাদের জন্য কিছু নগদ অর্থ দিয়েছি। এই শিশুদের জন্য সহায়তা করতে পেরে আমি আনন্দিত। এই শিশুরা যাতে সমাজের অন্য শিশুদের মতো সমান সুযোগ পেয়ে বড় হতে পারে, সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হবে।