ভোলা লালমোহনে দিন দিন বাড়ছে মহিষের দুধের চাহিদা
এম এ অন্তর হাওলাদার: বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে মহিষের দুধের। গোয়ালরা বেপারাীদের কাছে প্রতি কেজি দুধ বিক্রি করেন একশত টাকা করে। এসব দুধ দিয়ে তৈরি হয়; দধি, মিষ্টিসহ বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য। ভোলার লালমোহনের ছোট বড় প্রায় ১৫ টিরও অধিক বিচ্ছিন্ন চরে মহিষ পালন করা হয়।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, লালমোহনের বিভিন্ন চরাঞ্চলে ১৫ হাজারের মতো মহিষ রয়েছে। যেখান থেকে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৩৩ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদন হয়। পাইকারী ও খুচরা হিসেবে গড়ে প্রতি মাসে এসব মহিষের দুধ থেকে মালিকরা পান ত্রিশ লক্ষাধিক টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় সবচেয়ে বেশি মহিষ পালন করা হয় আট নম্বর চর, বৈষ্যার চর, ১২ নম্বর চর, বাদশাহ মিয়ার চর, চর সৈয়দ, চর কচুয়াখালী, চর রোজিনা, চর কচ্ছপিয়া, দেবির চর, চর খাজুর গাছিয়াসহ আরো কয়েকটি চরে।
সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি চর ঘুরে মহিষ মালিক ও রাখালদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চরে মহিষ পালতে গিয়ে নানান সমস্যার সম্মুখিন হতে হয় তাদের। কারণ চরগুলোতে নেই কিল্লা। যার ফলে জোয়ার বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে আশ্রয় না নিতে পেরে পানির সঙ্গে ভেসে যায় অনেক মহিষ। এতে করে ব্যাপক পরিমাণ ক্ষতি হয় তাদের। এছাড়া, চরগুলোতে রয়েছে মহিষের পান করার উপযোগি পানির সঙ্কট। যার ফলে লবনাক্ত পানি পান করে নানা রোগে আক্রান্ত হয় মহিষ। একারণে অনেক সময় মারা যায় অসংখ্য মহিষ।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে মহিষ মালিকরা বলেন, মহিষের দুধের চাহিদা অনেক। এ চাহিদা মেটাতে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে আমরা নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে দুধ উৎপাদন করছি। এই মহিষের দুধ থেকে আসা টাকায় চাঙ্গা হচ্ছে লালমোহনের অর্থনীতি। এই অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে যেসব চরে মহিষ পালন করা হয় সেখানে যেন দ্রুত কিল্লা নির্মাণসহ পানির জন্য টিউবওয়েল স্থাপন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের চিকিৎসকদের নিয়মিত নজরদারী কামনা করছেন মহিষ মালিকরা।
এ ব্যাপারে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনামিকা নজরুল বলেন, চরগুলোতে মুজিব কিল্লা নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ওই প্রস্তাবনাটি পাস হলেই চরে কিল্লা নির্মাণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া, বিশুদ্ধ পানির জন্য চরের মধ্যে টিউবওয়েল স্থাপনের বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হবে।