আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে চান? - বিস্তারিত
ঢাকা আজঃ শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
সর্বশেষঃ

কিডনীর সুরক্ষায় ভেষজ চিকিৎসা একক সমাধান !!

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের দেহকে নিপুণভাবে সৃষ্টি করেছেন। এ নৈপুণ্যতায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে হৃদযন্ত্র ফুসফুস, লিভার ও কিডনী, আর মস্তিষ্ক করে এদের নিয়ন্ত্রণ। নানা নৈপুূর্ণতায় হৃদপিণ্ড পাম্পিং মেশিন আর ফুসফুস ও কিডনী ছাকন যন্ত্র হিসেবে কাজ করে। True detox lead to true Health, কি হয় দেহযন্ত্র যখন তাদের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে বা হ্রাস পায়? কিভাবে আমরা তা পুনরুদ্ধার করতে পারি??প্রকৃতিতে এমন অনেক হার্বস আছে যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ কে তাদের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার মাধ্যমে দেহকে সুস্থ রাখে। আবার এমন অনেক হার্বস আছে যা বর্জ্য তথা অশার পদার্থ নিষ্কাশনের মাধ্যমে দেহকে বিষমুক্ত তথা De-toxify করে। আজ তেমন কিছু হার্বস নিয়ে আলোচনা করব যা লিভার ও কিডনির সুস্থতায় আমরা ব্যবহার করতে পারি। আর এসব রয়েছে আমাদের হাতের নাগালের মধ্যেই। উদাহরণ স্বরূপ শসা, ফুলকপি, আদা, পেয়াজ, রসুন, হলুদ, লালমরিচ, ধনিয়া, পালংশাক, বাঁধাকপি, ব্রুকলি, আপেল, লাল আঙ্গুর, স্ট্রবেরী, চেরী বেরীর কথাই বলা যাক। অনেক মানুষ মনে করে ক্যালসিয়াম বর্জন কিডনি পাথর হওয়ার রোধ করে। কিন্তু বাস্তবিক তার উল্টো। মূত্রে অতিরিক্ত Oxalate কিডনীতে পাথর তৈরি করে। ক্যালসিয়াম এই Oxalate সাথে বন্ধন তৈরি করে। ফলে এর শোষণ কমে যায় এবং শরীর এক বর্জ্য হিসেবে বের করে দেয়। পালং শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রুকলি, নটেশাকে পাওয়া যায় উচ্চমাত্রায় ক্যালসিয়াম। খাদ্য তালিকায় এসব সবজি থেকে সহজে কিডনী পাথরের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি। হলুদে আছে Curcumin যা প্রদাহ সৃষ্টিকারী মৌল ও এনজাইমকে হ্রাস করে প্রদাহনাশ হিসেবে chronic kidney disease এ কাজ করে। হলুদে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা সোডিয়াম এর সাথে যৌথভাবে শারীরের fluid balance এ নিয়ন্ত্রণ করে ও kidney disease এ পটাশিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখে। ধনিয়া antioxidant এর একটি ভালো উৎস। ইহা ক্যান্সার সেল এর বিশেষ জিন এর প্রকাশ তথা Expression কে হ্রাস করে। এ কারণে ইহা স্তন ক্যান্সার ও oxidative stress এ সেল ডেমেজকে বাধা প্রদান করে। এছাড়া ইহা Analgesic হিসেবে কাজ করে ফলে যে কোন ব্যথা ও প্রদাহে কাজ করে।
Antioxidant ও মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট যুক্ত শসাতে Lignans নামক পলিফেনাল থাকে যা ইস্ট্রোজেন জনিত ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আছে যা সোডিয়াম এর সাথে সহযোগী হিসেবে কাজ করে বডি ফ্লুইড নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত থাকে। শসাতে প্রচুর পরিমাণে Vit-K থাকায় আমাদের হাড়কে মজবুত করে ও রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এর Cucurbitacin ক্যান্সার সেল পুনঃপুন তৈরি বন্ধ করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এর আশ কোলেস্ট্রলকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং এ সংক্রান্ত হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। ফুলকপি antioxidant ও পলি নিউট্রিয়েন্ট স্তন সম্পূর্ণ যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। উচ্চমাত্রার আঁশের কারণে ইয়া কষ্ট কাঠিন্যতা দূর করে ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। পেয়াই যে আছে উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্রী রেডিকেল এর কারণে সেল ও ড্যামেজ থেকে দেহকে রক্ষা করে। এতে আছে ভিটামিন বি, বিশেষত B9 ও B6 (fyridoxin) যা বিপাক লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি ও স্নায়বিক কার্যাবলীতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
ইহা পটাশিয়ামের একটি ভালো উৎস। আর পটাশিয়াম সাধারণত cellular function, fluid balance, nerve transmission, kidney function,ও Muscle Contraction একক সক্রিয় ভূমিকা রাখে। পেয়াজে আছে Fisdin Quercetin ও Flavonoid antioxidant যা টিউমার সৃষ্টি হতে বাধা দেয়, ডায়বেটিস ও Osteoporosis এ কাজ করে।
পার্সেলেতে আছে Apiol ও Myristicin যা প্রাকৃতিক প্রবাহ কারক। আর এই প্রবাহ কারক গুণের কারণে মূত্রনালীতে প্রদাহ রোধ করে, কিডনিতে পাথর হওয়া প্রতিরোধ করে ও ছোট ছোট আকারে পাথরকে বের করে দেয়। রসুনের সক্রিয় উপাদান Allicin প্রদাহনাশক, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকনাশক, ফলে ইহা কিডনিকে পরিষ্কার রাখতে ও রক্ত পরিশোধিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। Nitric oxide উৎপাদনে দেহকে উদ্দীপ্ত করে। এর উজ্জ্বলতা লাল রং তথা Botanin প্রদাহ ও Oxidative Stress কমাতে সাহায্য করে ও কিডনি ড্যামেজ হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
কিডনি যখন বাহিরের টক্সিক উপাদান দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন সেখানে Fibrosis ঘটে। এ অবস্থায় কিডনির সুস্থ টিস্যু খুলে স্কার টিস্যুতে পরিণত হয়। আর স্কার টিস্যু সুস্থ টিস্যুর মত কাজ করতে পারেনা এবং কিডনির বর্জ্য নিষ্কাশন ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্থ করে। অধিক Fibrosis এর ফলে kidney disease হয় এবং কিডনি তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ধনিয়া ও আদা এর antioxidant গুণাবলী কিডনিকে সুস্থ ও কার্যক্ষমতা টিস্যু তৈরিতে উদ্দীপ্ত করে ও Fibrosis এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। তাই দেহকে ভালো রাখতে খাদ্য তালিকায় উপরোক্ত উপাদান গুলো রাখি ও সুস্থ জীবন যাপন করি।

হাকিম রাজিউর রহমান
অধ্যক্ষ
ইসলামিয়া ইউনানী কলেজ,ভোলা।

ফেসবুকে লাইক দিন