আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে চান? - বিস্তারিত
ঢাকা আজঃ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং, ১৮ই রমযান, ১৪৪৫ হিজরী
সর্বশেষঃ

জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সম্পাদকীয় মুক্ত চিন্তা !!

সম্পাদকীয় মুক্ত চিন্তাঃ-

বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কম থাকলেও বাংলাদেশে হঠাৎ করে বৃদ্ধি করার ফলে এক ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত শুক্রবার রাত থেকে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম ৪২-৫২ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এক লাফে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তকে সুচিন্তিত বলে মনে হয়নি। দেশের পরিবহনের বড় অংশই চলে ডিজেলে। পরিবহন খরচ এখন বাড়বে, এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আরো বেড়ে যাবে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে, মানুষের ত্রয়ক্ষমতা কমে যাবে। বিশেষ করে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষজনের দুর্ভোগ বাড়বে। এক কথায় শিল্প উৎপাদন, পরিবহন খাত সবকিছুতে এর প্রভাব পড়বে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে চাহিদা কমছে বলে বেশ কিছুদিন ধরে নিম্নমুখী তেলের দাম। যা গত শুক্রবার কিছুটা বাড়লেও ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। বলা হচ্ছে, পাশের দেশসহ বিভিন্ন দেশে নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করা হয়। ভারত গত ২২ মে থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি এবং পেট্রোল ১০৬ দশমিক ৩ রুপি নির্ধারণ করেছে। এই মূল্য বাংলাদেশি টাকায় যথাক্রমে ১১৪ দশমিক ০৯ টাকা এবং ১৩০ দশমিক ৪২ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি ৩৪ দশমিক ৯ এবং পেট্রোল লিটারপ্রতি ৪৪ দশমিক ৪২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছিল। তাই সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সরকারকে হয়তো দাম বাড়াতে হতো। কিন্তু একবারে এত বেশি বাড়ানো কতটা যুক্তিসঙ্গত? জানা গেছে, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া পেট্রোলের দাম ৮৬-১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৮৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা হয়েছে। অর্থাৎ নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে বেড়েছে এক লাফে ৩৪ টাকা। অকটেনের দাম বেড়েছে লিটারে ৪৪ টাকা। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেট্রোলের দাম। প্রতি লিটারে এর দাম বাড়ে ৪৬ টাকা। গত শুক্রবার থেকে এ দাম কার্যকর শুরু হয়েছে। পরের দিন শনিবার অফিসগামী মানুষের ভোগান্তির চিত্রও গণমাধ্যমে উঠে আসছে। সংকট দেখা দিয়েছে রাজধানীতে পরিবহনের। বিভিন্ন জেলায় গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। আরো নানামুখী সংকট হয়তো আমাদের সামনে দেখতে হবে। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব বহুমাত্রিক। এতে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় যেমন বাড়ে তেমনি সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতির ওপরও এর প্রভাব পড়ে। এমনকি ব্যয় বাড়ে কৃষি পণ্য উৎপাদনেও। কারণ ডিজেলের ব্যবহার সেখানে অপরিহার্য। ফলে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির এই প্রভাব কৃষিকাজেও পড়বে। বৈশ্বিকভাবে জ্বালানি তেলের দামের ওঠানামা, অস্বাভাবিক। এটি আসলে কতদিন চলবে সেটার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলে এখানে কমার প্রবণতা দেখা যায় না। বিশেষ করে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে পরিবহন খাতে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে- এদিকে সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন