আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে চান? - বিস্তারিত
ঢাকা আজঃ শনিবার, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই মে, ২০২৪ ইং, ৯ই জিলক্বদ, ১৪৪৫ হিজরী
সর্বশেষঃ

অবশেষে গাইবান্ধার সেই অচেনা প্রাণীটি শনাক্ত করেছেন

অনলাইন ডেস্ক:

গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার ছয়টি গ্রামে গত দেড়মাস ধরে যে অচেনা প্রাণীর হামলায় হতাহতসহ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সেই প্রাণীটিকে ‘খেকশিয়াল’ বলে শনাক্ত করেছেন ঢাকা থেকে আসা বন বিভাগের বিশেষজ্ঞ দল।
বুধবার দুপুর ২টার দিকে তিন সদস্যের দলটির সদস্য বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ মো. কামরুদ্দীন রাশেদ বলেন, ‘মঙ্গলবার ও বুধবার আমরা এসব এলাকায় সরেজমিন কাজ করেছি। নিহতের পরিবার ও আহতের সঙ্গে একান্তভাবে কথা বলেছি। তাছাড়া স্থানীয়দের সাথে কথা বলাসহ বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। পর্যবেক্ষণের সময় আমরা আক্রান্তদের ধরন, সময়, প্রাণীর আকার-আকৃতি, আচঁড়ের দাগ ও কামড়ের দাগের বিষয়গুলো নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করেছি। আমরা অনেকটা জায়গা জুড়ে বিভিন্ন প্রাণীর পায়ের ছাপ সংগ্রহ করেছি। এসব এলাকায় ছোট ছোট শিয়াল ও খেকশিয়ালের অবাধ বিচরণ রয়েছে। রয়েছে এসব প্রাণীর আধিক্যও। রাজশাহী বন বিভাগের বন্যপ্রাণী প্রকৃতি সংরক্ষণ দলের সদস্যদের সাথে আলোচনা করে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, এটা ছোট প্রকৃতির শিয়াল বা খেকশিয়াল। তিনি আরও বলেন, ‘পর্যবেক্ষণকালে আমরা এই এলাকায় অধিক সংখ্যক শিয়াল জাতীয় প্রাণীর উপস্থিতি পেয়েছি। সেখানকার বেশিরভাগ শিয়ালকে আমরা স্বাভাবিক থাকতে দেখেছি। খুব স্বল্প সংখ্যক শিয়াল জলাতঙ্ক ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় এই ঘটনা ঘটছে।’হরিনাথপুর গ্রামের উত্তরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ফেরদৌস সরকার বাড়ির পাশে ঘাস কাটতে গিয়ে একটি প্রাণীর হামলার শিকার হয়ে দুই সপ্তাহ পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুর বিষয় নিয়ে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ইমাম সাহেবের বিভিন্ন চিকিৎসাপত্র ও তার পরিবারের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে তার সুচিকিৎসা হয়নি। তাছাড়া তার চিকিৎসায় অনেক বিলম্ব হয়েছে। অথবা চিকিৎসায় কিছু ভুলের কারণে তিনি মারা গেছেন।’ঢাকা থেকে আসা বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ দলে আরও ছিলেন, মাহবুব-ই-খোদা জুয়েল ও গাজী সাইফুল তারিক। বিশেষজ্ঞ দলটির সদস্য মাহবুব-এ-খোদা বলেন, ‘এটি শিয়ালের প্রজনন সময়। এই সময় অনেক পশু-পাখির গায়ের রঙ কিছুটা পরিবর্তন ঘটে। যা এখানকার শিয়ালের ক্ষেত্রেও হয়েছে। এজন্য লোকজন আগের দেখা শিয়াল আর এখনকার শিয়ালের মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারছেন না।’রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, ‘আতঙ্কিত মানুষের মধ্যে আমরা কাউন্সিলিং করবো যাতে তাদের ভ্রান্ত ধারণা দূর হয়। এলাকার লোকজনের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে যাতে তারা আতঙ্কিত হয়ে সব প্রাণীকে মেরে না ফেলেন।’ হতাহতের ঘটনায় দু:খ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অবাধে বন্যপ্রাণী হত্যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যেটা এই এলাকাগুলোতে ঘটানো হচ্ছে। ডুমুরগাছা গ্রামে একটিমেছোবিড়ালকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এটা কখনোই কাম্য নয়।’দলটির সাথে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা, মোঃ রাহাত হোসেন ও বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির সহ শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন টিম ফর এনার্জি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ -তীর এর সভাপতি মোঃ রাকিবুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রিফাত হাসান, তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখা সভাপতি মোঃ জিসান মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।

ফেসবুকে লাইক দিন