ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের দাপটে জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার |
অলিখিত এক ফাইনাল দেখল ক্রিকেট বিশ্ব আম্পায়ারদের নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্বও ঠেকাতে পারেনি ভারতের স্মরণীয় পরাজয় ভারত : ২০ ওভারে ১৫১/৭ পাকিস্তান : ১৭.৫ ওভারে ১৫২/০ ফল : পাকিস্তান ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচশেষে ফেসবুক স্ক্রল করতেই একটি স্ট্যাটাস চোখে পড়ল। সেখানে লেখা ছিল, ‘ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের এগারো উইকেটের জয়।’ ক্রিকেটীয় কোন হিসেবে কি এগারো উইকেটে জেতা যায়? পরক্ষণে বুঝলাম পাকিস্তানের ১০ উইকেটের জয়কে স্ট্যাটাসদাতা কেন এক উইকেট বাড়িয়ে বললেন। পাকিস্তানের রান তাড়ায় ভুবেনেশ^র কুমারের ওভারে একাধিক ওয়াইড বল থেকে আম্পায়ার বঞ্চিত করেছে পাকিস্তানকে। শুধু তাই নয়, হাই ফুলটস একটি বলে মোহাম্মদ রিজওয়ান উড়িয়ে ছক্কা মেরেছিলেন। নিশ্চিতভাবেই সেটা ছিল নো বল। কিন্তু ভারতের ‘দ্বাদশ খেলোয়াড়’ তা হতে দেননি। তবে আম্পায়ারের পক্ষপাতিত্ব যাই করা হয়েছে, তা অনেকটা অনুমেয়ই ছিল। শুধু দেখার বিষয় ছিল এবারের ধরনটা কি হয়। তাও দেখা হয়ে গেল। কিন্তু তাতে পাকিস্তানের জয় আটকানো যায়নি। ‘আনলাকি থার্টিন’কে ‘লাকি থার্টিন’ বানিয়ে ইতিহাস বদলে দিল পাকিস্তান।
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে আগের ১২ দেখায় একবারও ভারতের বিপক্ষে জিততে পারেনি পাকিস্তান। বিশ্বমঞ্চে এই দুই দলের ১৩তম দেখায় এবার ভারতকে হারিয়ে দিল বাবর আজমের দল। গতকাল দুবাইয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান জিতেছে ১০ উইকেটে। শুধু বিশ^মঞ্চেই নয়, পাকিস্তান এর আগে টি-টোয়েন্টিতে কখনোই ১০ উইকেটের ব্যবধানে জেতেনি। আর যেকোন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভারতের ১০ উইকেটে হারের রেকর্ডও এটাই প্রথম। এছাড়া তিন সংস্করণ মিলিয়ে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি ২০০তম ম্যাচের উপলক্ষটা রেকর্ড গড়া জয়ে রাঙাল পাকিস্তান। আরব আমিরাতের দুবাইয়ের সেই রোমাঞ্চের আঁচ একটু হলেও লেগেছে এশিয়ায়। ভারতের এই লজ্জাজনক পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে আনন্দে উল্লোসিত হয়ে ওঠে বাংলাদেশের ক্রীড়ামোদীরাও। ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে সমর্থকদের পটকা ফোটাতেও দেখা যায়। এ যেন নিজেদের ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দেওয়ার মতো। একটু আগেই যে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গেছে বাংলাদেশ, সেটি ভোলারই যেন ‘বায়বীয়’ চেষ্টা।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই উত্তেজনা। সমর্থকদের দৃষ্টিতে ‘অলিখিত ফাইনাল’। উত্তেজনার পারদে ঠাসা ম্যাচটা দর্শকরা যেমন চেয়েছিল ঠিক সেরকমই হয়েছে। কোনভাবেই আটকে রাখা যায়নি পাকিস্তানকে। বাবর আজমের ক্রিকেটীয় দর্শনের কাছে হার মানল বিরাট কোহলি ব্রিগেড। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একক আধিপত্য দেখিয়ে দাপুটে জয় পেয়েছে পাকিস্তান। ম্যাচের প্রথম বল থেকে বাবর আজমদের শরীরী ভাষায় যেন ইতিহাস বদলানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিল। দুবাইয়ে টস জিতে বিরাট কোহলিদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান বাবর আজম।